[ad_1]
নিজস্ব প্রতিনিধি, দিল্লি – রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সফরের আগে ভারতে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রের ডেলিভারি শুরু হয়েছে। যদিও ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এই ডেলিভারির কথা ঘোষণা করেনি, তবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এস৪০০ মিসাইল সিস্টেম প্রস্তুতকারী সংস্থার ডাইরেক্টরের সূত্রের উল্লেখ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
এস-৪০০ ‘ট্রায়াম্ফ’ প্রস্তুত কারী রাশিয়ান সংস্থা ফেডারেল সার্ভিস ফর মিলিটারি-টেকনিক্যাল কো-অপারেশনের (এফএসএমটিসি) ডাইরেক্টর দিমিত্রি শুগায়েভ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘স্পুটনিক’কে জানিয়েছেন, ভারতে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ শুরু হয়েছে। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী পুরোনো ‘শিডিউল’ অনুযায়ী ডেলিভারি চলছে।
সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভিআর চৌধুরীও জানান, এই বছরের শেষ নাগাদ ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম পাবে। আগামী মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন তাঁর সরকারি সফরে ভারতে আসছেন। তিনি দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক মজবুত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বার্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন বলেও জানান তিনি।
সূত্রের খবর, ভারত S-400 মিসাইলের প্রথম ইউনিট এমন জায়গায় মোতায়েন করা হবে, যা চীন এবং পাকিস্তান উভয় দেশের বিরুদ্ধেই কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। উল্লেখ্য, ভারত ২০১৬ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার সাথে একটি আন্তঃ-সরকারি চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার অধীনে ভারতীয় বায়ুসেনা S-400 ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্রের মোট পাঁচটি ইউনিট (রেজিমেন্ট বা ‘ফ্লাইট) পাবে। তবে মূল চুক্তিটি ২০১৮ সালের অক্টোবরে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকার এই চুক্তির আওতায় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মিসাইল সিস্টেম পেতে চলেছে ভারত। S-400 মিসাইল দূরপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা প্রদানে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার পাল্লা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র যদি কোনো বিমান বা প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে, তাহলে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সময়মতো তা ধ্বংস করতে সক্ষম বলে প্রমাণিত হবে। এটি একটি অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল, অর্থাৎ এটি শব্দের গতির চেয়েও দ্রুত গতিতে আক্রমণ করতে পারে।
প্রতিটি ফ্লাইটে (রেজিমেন্ট বা স্কোয়াড্রন) আটটি লঞ্চার থাকবে এবং প্রতিটি লঞ্চারে চারটি মিসাইল-টিউব থাকবে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা একযোগে বহুমুখী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। অর্থাৎ, এটি একই সাথে শত্রুর যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ইউএভি এবং ক্রুজ মিসাইলকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে, তাও বিভিন্ন রেঞ্জে (৪০, ১২০, ২৫০, ৪০০ কিমি পর্যন্ত)।
উল্লেখ্য, চীন এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার গুণাগুণ বিবেচনায় রাশিয়ার কাছ থেকে S-400 সিস্টেমও কিনেছিল এবং গত বছর পূর্ব লাদাখে ভারতের সাথে উত্তেজনার সময় এটি LAC-তে মোতায়েন করেছিল। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে S-400 ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি নিয়ে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ উত্থাপিত হয়েছিল কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সাথে যেকোনো দেশের অস্ত্র চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর জন্য, আমেরিকার পার্লামেন্ট কাটসা অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা আইনের মাধ্যমে আমেরিকা প্রতিপক্ষকে মূল্যায়ন করেছে। কিন্তু কাটসা সত্ত্বেও S400 মিসাইল নিয়ে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে চুক্তি হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রও পরোক্ষভাবে তাতে সম্মত হয়েছে। কারণ ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে চুক্তির পর মার্কিন পার্লামেন্টে কাটসা আইন পাস হয়।
[ad_2]